বিজ্ঞান ভালো, কিন্তু যথেষ্ট নয়!
দার্শনিক অ্যালেক্স রোজেনবার্গ তাঁর “দ্য অ্যাথিস্টস গাইড
টু রিয়ালিটি” (The Atheist’s Guide to Reality) বইয়ে নিজের ব্যাক্তিগত
বিশ্বাসকে সমর্থন করে বলেছেন যে “বিজ্ঞানের পদ্ধতিই
যেকোনো কিছুর জ্ঞান অর্জনের একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপায়।” তাঁর এই দর্শনকে
“বিজ্ঞানবাদ” (Scientism) বলা হয়
এবং বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ সন্দেহবাদী, নাস্তিক ও ধর্মবিরোধী ব্যাক্তিরা এই ধারনাকে
সত্য বলে মেনে নিয়েছেন। রোজেনবার্গ তার অলৌকিক ও অতিপ্রাকৃতবাদ-বিরোধী বিশ্বাসের প্রেরণায়
দাবি করেছেন যে “বিজ্ঞান বাস্তবতা সম্পর্কে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ
সত্য প্রদান করে, এবং এই সত্যগুলি জানাই প্রকৃত বোধগম্যতা।” অন্য কথায়ঃ
যদি বিজ্ঞান কোনকিছু প্রমাণ করতে না পারে, তবে সেটা সত্য বলে বিশ্বাস করার যোগ্য
নয়! একটা ব্যাপারে রোজেনবার্গকে কৃতিত্ব আর প্রশংসা দিতেই হয়, মানুষটা কিন্তু
তার যুক্তিতে একেবারেই অনড় এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ যে কেউ বিজ্ঞানবাদ গ্রহণ ক’রে,
যেহেতু বিজ্ঞান মহাবিশ্বের পরিমাপযোগ্য, পরীক্ষাযোগ্য এবং পর্যবেক্ষণযোগ্য জিনিসগুলি
অনুসন্ধানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, তাই তেমন মানুষের পক্ষে “অলৌকিক” বা “আধ্যাত্মিক”
কোনো কিছুর অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলাটা অনুমানমূলক ও মুর্খামি। রোজেনবার্গ স্বীকার করেছেন
স্বাধীন ইচ্ছা (Free Will), উদ্দেশ্য (Purpose), বস্তুনিষ্ঠ নৈতিকতা (Objective
Morality) এবং অমরত্বের (Immortality) মতো বিষয়গুলি তার বিশ্বদৃষ্টির (Worldview) অংশ
নয় এবং সেগুলিকে তিনি মায়া (Illusions) বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু
নেই! দিনশেষে, বিজ্ঞানবাদের এই সংকীর্ণ বিশ্বদৃষ্টি (Worldview) কে ভুল প্রমাণ করার
এবং যুক্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
বিজ্ঞানবাদ আত্ম-খণ্ডনকারী
“সত্যকে জানবার জন্য এবং যে কোনও বিষয়ে
জ্ঞান অর্জন করার জন্য বিজ্ঞানই একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপায়” এই উক্তি, এই বিশ্বাস
সম্পূর্ণ ভাবেই অবৈজ্ঞানিক এক ধারনা থেকে জন্ম, এটা কখনই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দ্বারা প্রমাণ
করা সম্ভব নয়। আজও পর্যন্ত বিশ্বের বিজ্ঞান মহলে এ কথা কেউই দাবী করেনি এবং পরেও কেউ
করবে না। এই বক্তব্যের সত্যতা পরীক্ষা করার জন্য, আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি কোন বৈজ্ঞানিক
পরীক্ষা প্রমাণ করেছে, যে বিজ্ঞানবাদ সত্য? অথবা, এমন কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা আছে কী,
যা দ্বারা প্রমাণ করা যায় যে বিজ্ঞানবাদ সত্য? অবশ্যই, গভীরভাবে চিন্তা করলে এই প্রশ্নটি
আসলে অর্থহীন। এটা ঠিক যেন এমন প্রশ্ন করার মতো যে, কোন গাণিতিক সমীকরণ প্রমাণ করে
যে আঠারো শতকে নেপোলিয়নের অস্তিত্ব ছিল। বাস্তবতা নির্ধারণের জন্য বিজ্ঞানবাদই প্রকৃত
ভিত্তি কিনা, তা নিশ্চিতরূপে জেনে সঠিক সিধান্ত নিতে গেলে, একজন নাস্তিক, সন্দেহবাদী
ও যুক্তিবাদী ব্যাক্তিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বাইরে গিয়ে অনুসন্ধান করার ইচ্ছা প্রকাশ
করতে হবে। তাকে দার্শনিক পদ্ধতি ব্যবহার করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু মজার বিষয়,
বিজ্ঞানবাদ নিজেই সংজ্ঞা অনুসারে দর্শনের জ্ঞানতাত্ত্বিক মূল্যকে (Epistemic
Value) প্রত্যাখ্যান করে। এটাও মনে রাখা দরকার যে, প্রথমে কিছু দার্শনিক অনুমান
(Philosophical Assumptions) না করেই বিজ্ঞানের কোন কাজ করা অসম্ভব। বিজ্ঞান নৈতিক
সত্যকে প্রমাণ করতে পারে না, বহির্বিশ্বের বস্তুনিষ্ঠ বাস্তবতা প্রমাণ করতে পারে না,
পদার্থবিদ্যার নিয়মগুলি কী ভবিষ্যৎ ধারণ করবে তাও নিশ্চিতরূপে প্রমাণ করে বলতে পারে
না, এমনকি মানুষের জ্ঞানীয় ক্ষমতাগুলি বাস্তবতার যে সত্য বিবরণ দিতে পারে না, এটাও
বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারে না; তবুও এই ধরণের অনুমানগুলি বিজ্ঞানের আধিভৌতিক
(Metaphysical) ভিত্তি হিসাবে বহুকাল থেকে কাজ করে আসছে, বিজ্ঞানকে ধরে রাখছে এবং একে
এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। তাই দর্শনের (Philosophy) দরজা না খুলে দিলে, আপনি বিজ্ঞানকে
সুসংগতভাবে জানতে, বুঝতে বা আহরণ করতে পারবেন না।
বিজ্ঞান বস্তু জগতের সবকিছু বর্ণনা করতে পারে না
বিজ্ঞান বাস্তব জগতের সম্পূর্ণ বর্ণনা দিতে পারে না, যদিও প্রাকৃতিক
জগতের সবকিছুই আমাদের চোখের সামনেই বিদ্যমান। বিজ্ঞান আমাদের “পরিমাণগত তথ্য”
(Quantitative Data) দিয়েছে বলে গর্ব বোধ করে। কিন্তু নাস্তিক দার্শনিক বার্ট্রান্ড
রাসেল স্বীকার করেছেন, ভৌত সত্তা (Physical Entities) কীভাবে কাজ করে তা বর্ণনা
করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছেঃ “All
that physics gives us is certain equations giving abstract properties of their
changes. But as to what it is that changes, and what it changes from and to—as
to this, physics is silent.” (Ref: My
Philosophical Development)
অ্যালেক্স রোজেনবার্গ, একজন জনপ্রিয় বিজ্ঞান দার্শনিক, তিনি বলেছেন
যে, সমস্ত বিজ্ঞানকে পদার্থবিদ্যার “পরিমাণগত তথ্যে” কমিয়ে আনা যেতে পারে। কিন্তু
বস্তুজগতের সম্বন্ধে মানুষের যে সাধারণ অভিজ্ঞতা আছে তা “পরিমাণগত তথ্যে”র বাইরেও
যায়, এতে “গুণগত তথ্যও” (Qualitative Data) অন্তর্ভুক্ত থাকে। রোজেনবার্গ এবং
অন্যান্যরা প্রাকৃতিক জগতের বাস্তবতাকে “পদার্থবিদ্যা যা বলছে, তাই…”
- এ পরিণত করতে চান। কিন্তু এমন কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই যে, আমাদের ইন্দ্রিয়গত উপলব্ধি,
যেমনঃ দৃষ্টি এবং শব্দ, পদার্থবিদ্যার সমীকরণের চেয়ে কম বাস্তব ও নির্ভরযোগ্য, যা
কণা, বল বা বস্তুজগতের প্রাকৃতিক বাস্তবকে আহরণ করে। আসলে, বিজ্ঞান চর্চা করতে হলে
আমাদের প্রথমে ইন্দ্রিয়গত উপলব্ধির গুণগত অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করতে হবে। আমেরিকান
দার্শনিক এডওয়ার্ড চার্লস ফেসার লিখেছেনঃ “Now our
ordinary experience of nature is of course qualitative through and through. We
perceive colors, sounds, flavors, odors, warmth and coolness, pains and itches.
. . . Physics abstracts from these rich concrete details, ignoring whatever
cannot be concretely expressed in terms of equations and the like and thereby
radically simplifying the natural order.” (Ref: Scholastic Metaphysics)। সহজ ভাবে বললে, মানুষ
ইন্দ্রিয় দ্বারা যা কিছু উপলব্ধি করে, তা থেকে মূর্ত ভাবে বোঝা যায় যা কিছু পদার্থ
বিজ্ঞান তার সারাংশ প্রকাশ করে, আর যা মূর্ত ভাবে বোঝা যায়না, তা এড়িয়ে চলে যায়। আমাদের
ইন্দ্রিয়গত অভিজ্ঞতাগুলি যদিও ব্যক্তিগত, আমরা জানি যে সেগুলি বাস্তব এবং প্রাকৃতিক
জগতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। প্রকৃতপক্ষে, ইন্দ্রিয়ের গুণগত উপলব্ধি হল সেই জায়গা
যেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি শুরু হয়। তবুও আমি যা দেখতে পাই তা অন্য কেউ দেখতে পায়
না, বা আমি যা শুনতে পাই তা অন্যেরা শুনতে পায় না। শব্দ তরঙ্গের পরিমাপ নেওয়া যেতে
পারে এবং তার গাণিতিকভাবে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে, কিন্তু আমি প্রকৃত যে শব্দ শুনি
সেটা আমি ছাড়া আর অন্য কেউ শুনতে পায় না। আমার ইন্দ্রিয়গত অভিজ্ঞতা অন্যদের কাছে
অপ্রাপ্য বটে, আবার অন্যদের কাছে তা অবাস্তব বলেও মনে হতে পারে, তবুও আমার এই অভিজ্ঞতা
আসলেই এক বাস্তব। ধরুন, এক দুর্ঘটনায় আমার ডান চোখটা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি এখন বাঁ চোখেই
সবকিছু দেখি। কিন্তু আপনার দুটো চোখই আছে। আমি যখন আপনাকে ব্যাখ্যা করবো শুধুমাত্র
বাঁ চোখ দিয়ে আমি কী ভাবে এই বস্তুজগৎ কে দেখি, সেটা আপনি বুঝতে পারবেন না। যেহুতু
আপনি দুটো চোখেই বস্তুজগৎ কে দেখেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা ভুল
কিংবা অবাস্তব নয়।
বিজ্ঞান বস্তু জগতের সবকিছু ব্যাখ্যা করতে পারে না
টমাস নাগেল, একজন বিশিষ্ট দার্শনিক এবং নাস্তিক, তিনি স্বীকার করেছেন
যেঃ “the physical sciences, in spite of their
extraordinary successes in their own domain, necessarily leave an important
aspect of nature unexplained.” (Ref: The
Core of Mind and Cosmos)। বিজ্ঞান যে বিষয়টি আজও ব্যাখ্যা করতে
পারে না তা হলো, আদৌ প্রকৃতির অস্তিত্ব কেন আছে? বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীরা একটি
বিষয়ে একমত যে, পদার্থবিদ্যা এবং জ্যোতির্বিদ্যার (Astronomy) সেরা প্রমাণগুলি মহাবিশ্বের
একটি আদি সূচনার দিকে ইঙ্গিত করে। কিন্তু বিজ্ঞান মহাবিশ্বের আদি সূচনা ছিল বলে
ইঙ্গিত করুক বা না করুক, বিজ্ঞান কখনই আমাদের এটা বলতে পারবে না, কেন এই মহাবিশ্ব না
থাকার পরিবর্তে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব আছে। মহাবিশ্বের অস্তিত্ব না থাকা পর্যন্ত
বিজ্ঞান নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারে না। মহাবিশ্বের অস্তিত্বের সূচনা হোক বা
না হোক, সমষ্টিগত ভাবে ঠিক কতটা সময়, কতটা স্থান, কত পরিমাণে কোন কোন পদার্থ এবং কত
পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়েছিল মহাবিশ্বের অস্তিত্বের সূচনার জন্য, এর নিখুঁত বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারে না, বরং বিজ্ঞান এই বিষয়ে অনুমান করে নিয়েছে। সাধু
থমাস অ্যাকুইনাস, একজন বিখ্যাত ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক, তিনি যুক্তি দিয়েছেন, “যদি ধরে নেওয়া যায় অতীতে মহাবিশ্বের চিরন্তন অস্তিত্ব ছিল, তবুও
এর ব্যাখ্যা প্রয়োজন”। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছেন যে, “মহাবিশ্ব নিজেকে ব্যাখ্যা করে না এবং তাই এটি অন্যের ব্যাখ্যার
উপর নির্ভরশীল”। (Ref: The Summa
Theologiæ of St. Thomas Aquinas, Second and Revised Edition, 1920)
ঠিক যেমন একটি লাল ইটের প্রাচীর লাল কারণ এর সমস্ত ইট লাল, ঠিক একইভাবে একটি আকস্মিক
মহাবিশ্বের আকস্মিক (Contingen) কারণের সমস্ত উপাদান আকস্মিক; এবং আকস্মিক যেকোনো কিছুর
অস্তিত্বের কারণ ব্যাখ্যা প্রয়োজন। যখন কথা ওঠে মহাবিশ্বের অস্তিতের কারণ ব্যাখ্যা
নিয়ে, তখন এটি এমন এক ব্যাখ্যা, যা বিজ্ঞান দিতে অক্ষম। সাধু থমাস অ্যাকুইনাস দেখিয়েছেন
মহাবিশ্ব কেন অনবরত পরিবর্তনশীল এবং কেন এটা চির গতিশীল তা ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে
বিজ্ঞান মৌনব্রত পালন করেছে। তিনি দেখিয়েছিলেন যে পরিবর্তনের সার্বজনীন ঘটনাটিকে বৈজ্ঞানিকভাবে
নয় বরং দার্শনিকভাবে বিবেচনা করা উচিত। একটি জনপ্রিয় গুজবের বিপরীতে, নিউটনের জড়তার
সূত্র (Law of Inertia) থমাসের এই যুক্তিকে থামাতে
পারেনি কারণ নিউটনের সূত্রটি কেবল স্থানীয় গতির [Local
Motion] (বস্তুর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গতি) সাথে সম্পর্কিত, এবং থমাসের
যুক্তির মতো আধিভৌতিক পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত নয়। আজকাল, কিছু বিজ্ঞানী আমাদের
এই সীমাবদ্ধ মহাবিশ্বের (Finite Universe) অস্তিতের কারণ ব্যাখ্যার ধর্মতাত্ত্বিক ও
দার্শনিক প্রশ্নগুলি চালাকির সাথে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বহুবিশ্বের
(Multiverse) অস্তিত্বের সম্বন্ধে মতবাদ দিতে শুরু করেছেন। কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে
না। কারণ এখনও সেই একই প্রশ্ন থেকে যায়, “কেন এই বহুবিশ্ব না থাকার পরিবর্তে বহুবিশ্বের
অস্তিত্ব আছে?” WHY SOMETHING EXISTS, RATHER
THAN NOTHING? বিজ্ঞানবাদের মতো সন্দেহবাদী বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির খারাপ পরিণতির
কথা এখানে আর বললাম না। এটি একটি অধিবিদ্যাগত তত্ত্ব, একটি দার্শনিক ব্যাখ্যা, যা বিজ্ঞান
দ্বারা প্রমাণিত হতে পারে না; কারণ বিজ্ঞান নিজে ও তার সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বস্তুগত
মহাবিশ্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
বিজ্ঞানবাদ যথেষ্ট নয়
বিজ্ঞানবাদ কেবল নিজেকেই খণ্ডন (Self Refuting) করে না, বরং এই দৃশ্যমান বস্তুগত জাগতিক বাস্তবতা সম্পর্কে সবকিছুর পুর্ণাঙ্গ বর্ণনা ও সঠিক ব্যাখ্যা দিতেও অক্ষম। বিজ্ঞান যা কিছু সত্য বলে অনুমান করে, এই বাস্তব মহাবিশ্ব তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু। আমাদের এই মহাবিশ্ব এমন কিছু সত্য নিজের মধ্যে বহন করে চলেছে, যার উত্তর বিজ্ঞানের কাছে নেই। এ কথা বিজ্ঞানীরাও জানে। স্বাধীন ইচ্ছা এবং নৈতিকতার মতো বিষয়গুলির উপর আমাদের যে স্বজ্ঞাত মানব অভিজ্ঞতা আছে, তা থেকে বোঝা যায় যে বাস্তব জগৎ রোজেনবার্গের মতো সংশয়বাদীদের দাবির মতো নয়। কিন্তু চূড়ান্ত বিশ্লেষণে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিজেই বিজ্ঞানবাদকে সমর্থন করতে ব্যর্থ। কারণ বিজ্ঞান নিজের জন্য যে সীমা ও পরীক্ষামূলক নিয়মগুলি নির্ধারণ করে রেখেছে, তার কারণেই মহাবিশ্বের পুর্ণাঙ্গ বাস্তবতা ও সম্পূর্ণ সত্যের ব্যাখ্যা দিতে বিজ্ঞান অক্ষম।