পুরোনো দিনের কথা একবার ভেবে দেখুন। যখন মানুষের কাছে ইন্টারনেট ব্যাবস্থা ছিল না।তখন তারা চাইলেই Google এ একটা সার্চ দিয়ে তাদের পছন্দের বিষয় সম্বন্ধে জানতে বা পড়তে পারতো না। সে সময়ে মানুষের কাছে জ্ঞান অর্জনের দুটি মাত্র সাধন ছিল। বই আর খবরের কাগজ। এমনকি, সে সময়ে মানুষ বই পড়েই নিজেদের মনরঞ্জন মেটাত। তখনকার দিনে মানুষের মধ্যে বই পড়বার একটা কালচার ছিল। অনেকের আবার বই পড়বার চাইতে, বই কিনে ঘর ভর্তি করবার নেশা ছিল। তখন মনে করা হতো, যার বাড়ীতে যত বেশী বই, তার Social Status বা সামাজিক অবস্থান ততই উপড়ে থাকতো। অবশ্য আমাদের এ যুগের কাহিনী একেবারে উল্টো। এখন যার কাছে iPhone আছে, বলতে গেলে সে এখন সমাজে সকলের চাইতে এগিয়ে। যাই হোক, ইন্টারনেট আসার পর থেকে কাগজে তৈরী হওয়া বইয়ের প্রযুক্তিকরণ (Digitize) করা হচ্ছে। অর্থাৎ, কাগজের বইকে পিডিএফ, অডিও, ই-বুক কিংবা কিন্ডেল ফাইল ফরম্যাটের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই সমস্ত ফাইল ফরম্যাটের দ্বারা একজন ব্যাক্তি তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও ত্যাব এর মাধ্যমে তার পছন্দের বইটি পড়তে পারবেন। এতে তাকে শারীরিক ভাবে একটা বই কিনতে আর হচ্ছে না। বইগুলি থাকছে ক্লাউড সারভারে কিংবা ফোনের মেমোরিতে। বর্তমানে কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম আছে, যেখানে আপনি একটা অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার পছন্দমতো লেখকের বই থেকে গল্প ও উপন্যাসও পড়তে পারেন। প্রতিলিপি (pratilipi.com) হলো তেমনই একটি অনলাইন প্লাটফর্ম। অবশ্য আজও অনেকেই মনে করেন যে প্রযুক্তিকৃত বই পড়বার চাইতে, শারীরিক ভাবে বই কিনে পড়া অনেক ভালো। এটা মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে হিতকর। এ কথা সত্যি! তাই আপনার কাছে তুলে ধরছি বই পড়ার সেই ১০ টি বিশেষ উপকারিতা সম্পর্কে যা প্রত্যেকেরই জানা দরকার।
১) মূল্যবান জ্ঞান অর্জন
অবশ্যই, যে কোনও বই হাতে নিয়ে পড়বার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো জ্ঞান
অর্জন করা। মানুষ হলো জ্ঞান পিপাসু প্রাণী। সে নিত্যনতুন বিষয়গুলি সম্বন্ধে জানতে চায়। কথায় আছে; মানুষ যতদিন বাঁচে, ততদিন সে শেখে। আপনি যত বই পড়বেন, ততবেশি জানবেন ও শিখবেন। একটা বিষয়ের উপর আপনি ১৫ মিনিটের একটা
ইউটিউব ভিডিও দেখলেন, আর অন্যদিকে ঐ একই বিষয়ের উপর লেখা
একটি বই পড়লেন যা লেখকের ৩০ বছরের পড়াশুনা ও গবেষণার ফল। এই দুটির মধ্যে কোনটা
আপনাকে অধিকমাত্রায় জ্ঞান অর্জনের তথ্য দেবে? আপনার কি মনে হয়? ব্রিটিশ লেখক, রুয়াল দাল বলেছেনঃ “তুমি যদি জীবনে কোথাও গিয়ে পৌঁছাতে চাও, তাহলে তোমাকে অনেক বই পড়তে হবে।”
২) মস্তিস্কের ব্যায়াম
জানেন কি
নিয়মিত বই পড়লে আপনার মস্তিস্কের ব্যায়াম হয়? ১৭শ খ্রীষ্টাব্দের ইংরেজী লেখক যসেফ এডিশন একবার লিখেছিলেনঃ “ব্যায়াম করলে শরীরের যা হয়, বই পড়লে মস্তিস্কের ঠিক তাই হয়।” National Library of Medicine -[https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4128180/]
এর এক গবেষণা অনুযায়ী বই পড়লে আপনার
মস্তিষ্কের নিউরাল সার্কিট এবং সংকেতগুলির একটি জটিল নেটওয়ার্ককে উদ্দীপিত করে। এছাড়াও, আপনি যত বই পড়বেন তার সাথে সাথে এই
নেটওয়ার্কগুলি শক্তিশালী এবং আরও পরিশীলিত হয়ে উঠবে।
আরেকটি গবেষণা
অনুযায়ী [https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3868356/],
যখন আপনি কোনও উপন্যাস পড়েন তখন আপনার
মস্তিস্কের মধ্যে বিশেষ এক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় যা মানুষের আবেগময় বুদ্ধিমত্তার
সাথে জড়িত। মস্তিস্কের স্ক্যান থেকে জানা গেছে যে, নিয়মিত বই পড়লে আপনার মস্তিস্কের মধ্যেকার নেউরাল যোগাযোগ
ব্যাবস্থা আরও মজবুত হয়, যা আমাদের মস্তিস্কের
জন্য খুবই ভালো। মানব মস্তিস্কের ব্যাবহার না হলে, এটা একসময় তার ব্যাবহারিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। তবে যাই হোক, আমরা যদি নিয়মিত বই পড়ি, তাহলে আমরা মস্তিস্কের কার্যকলাপ এবং ক্ষমতাকে জীবিত ও
সতেজ করে রাখি।
৩) মনোযোগের বৃদ্ধি
নিয়মিত বই
পড়ার অভ্যাস আপনার মনোযোগের বৃদ্ধি ঘটায়। যে কোন কাজে সফল হওয়ার জন্য, একাগ্রতা ও মনোযোগের বিশেষ প্রয়োজন হয়। এই দুইটির উপর নির্ভর করে আমাদের জীবনের স্থিতিশিলতা। গবেষণা বলছে, আধুনিক যুগে দৈনন্দিন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের ব্যবহার, ফোনে ঢুকতে থাকা ক্রমাগত নোটিফিকেশন আর মাল্টিটাস্কিঙ্গের
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস আধুনিক যুগের মানুষকে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে মনযোগী হতে অক্ষম করে
তুলেছে। মাইক্রোসফটের [https://time.com/3858309/attention-spans-goldfish/]
করা একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বর্তমান যুগের মানুষ ৮ সেকেন্ডের বেশী নিজের মনোযোগ কোন
একটি বিষয়ের উপর ধরে রাখতে পারছে না। তারা বলছেন, মোবাইল আর ইন্টারনেটের আবির্ভাবের ফলে মানুষের মস্তিস্ক
একই সাথে অনেক ধরণের উত্তেজক (Stimuli) মোবাইলের
স্ক্রিন থেকে গ্রহণ করছে। ফলে মানুষের মস্তিষ্ক অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিকে আলাদা করে বাছাই করতে পারছে না আর প্রয়োজনীয় বিষয়গুলিতে ফোকাস করতে পারছে না।
তবে নিয়মিত
বই পড়বার অভ্যাস একজন ব্যাক্তির মস্তিষ্ককে একই সময়ে একটি বিষয়ের উপরে মনযোগী করে তুলতে
সাহায্য করে এবং তার সাথে বেড়ে ওঠে একাগ্রতা।
৪) স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
আপনি কি
প্রায়ই অনেক জিনিস ভুলে জান? কিছু দরাকারি কাজ করবেন
বলে ভেবে রেখেছিলেন, কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল যে আপনি
সেগুলো বেমালুম ভুলে গেছেন। আপনি যদি তাদেরই একজন হয়ে থাকেন, তাহলে আজই হাতে একটা বই তুলে নিন আর পড়তে শুরু করুন। কারণ নিয়মিত বই পড়বার অভ্যাস আপনার স্মৃতিশক্তিতে বৃদ্ধি করে। আপনি যখন একটা উপন্যাসের বই পড়েন, তখন আপানকে সেই উপন্যাসের সবকটি চরিত্র, সবকটি ঘটনা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিকে একসাথে মনে রাখতে হয়। এই সকল নতুন তথ্য আপনার মস্তিষ্কে নতুন স্মৃতি ধারণ করে এবং এই নতুন স্মৃতিগুলি
সময়ের সাথে সাথে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই ভাবে আপনার মস্তিষ্কে স্মৃতিশক্তি
ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৫) বিনোদন দেয়
বই হলো বিনোদনের
সবচেয়ে পুরনো মাধ্যম। যখন টেলিভিশন, ইন্টারনেট আর স্মার্ট ফোন ছিল না, তখন মানুষ বিভিন্ন গল্পের বই পড়ে নিজেদের বিনোদন করতো। বিখ্যাত লেখক স্টিফেন
কিংগের কথা জানেন তো? তার ভৌতিক উপন্যাস ‘IT’ এর অনুপ্রেরণায় তৈরী হয়েছিল ভৌতিক ইংরেজি সিনেমা “IT এবং IT Part 2”। তিনি বলেনঃ “বই বিস্ময়কর জাদু সৃষ্টি করতে পারে।” অনেক সময় মানুষের সাথে
এমনটা হয় যে, তারা একটা বই পড়বার জন্য হাতে তুলে
নিয়েছে, তারা পড়ে চলেছে, অথচ তাদের সময়ের খেয়াল নেই। দিন গড়িয়ে কখন রাত হয়ে
গেছে, তারা সেটা বুঝতেই পারে না। এটাই হল সেই জাদু। বই পড়তে গিয়ে যখন আপনার মনের মধ্যে আবেগ ও অনুভূতির সৃষ্টি
হয়, তখন সেই পড়াটা রোমাঞ্চে পরিণত হয়। বাজারে বলুন কিংবা অনলাইনে; কয়েক লক্ষ বই আছে পড়বার মতো। আজকাল অনলাইনে সব ধরণের
সব বিষয়ের উপর বই কিনতে পাওয়া যায়। প্রত্যেকের বয়স এবং রুচি অনুযায়ী। তবে আর কিসের অপেক্ষা, নিজের পছন্দের বিষয়ের
উপর লেখা একটা বই কিনে ফেলুন এবং নিজের অবসর সময়ে বাড়ীর আরামদায়ক পরিবেশে বসে বইয়ের
মধ্যে একেবারে ডুবে জান। আর হ্যাঁ, আপনার স্মার্ট ফোনটাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখুন।
৬) চিন্তা করবার ক্ষমতা বৃদ্ধি
নিয়মিত বই
পড়বার একটি বিশেষ উপকারিতা হলো, এটা মানুষের চিন্তা ও
বিশ্লেষণ করবার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। যখন আপনি কোন বই পড়েন, তখন আপনি লেখকের নিজের চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। তার দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ করবার দক্ষতা আপনার মধ্যেও স্থানান্তরিত হচ্ছে। প্রতিটি লেখক তার লেখা বইয়ের পাতায় নিজের চিন্তা ভাবনার ছাপ রেখে যায়। হতে পারে, লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ
আপনার ব্যাক্তিগত মানসিকতার সাথে মেলে না। এতে আপনি নিজেকে আরও ভালভাবে জানবার
একটা সুযোগ পেলেন। এবং তার সাথে শিখলেন কি ভাবে একটা বই পড়বার পর, তার মধ্যে দেওয়া তথ্যগুলিকে আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে
সঠিক বিবেচনা করে কাজে লাগাবেন বা প্রয়োগ করবেন। আপনি যত বেশী বই পড়বেন, আপনার চিন্তা করবার শক্তি ততই ধারালো হয়ে উঠবে। লেখক জন গ্রিন বলেছেন: “মহান বই আপনাকে
বুঝতে সাহায্য করে…”
৭) যোগাযোগ দক্ষতাকে বৃদ্ধি করে
মানুষের
সাথে যোগাযোগ করার সঠিক কার্যকারিতা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দক্ষতা। এটা ছাড়া আমরা জীবনে চলতে পারবো না। আজকাল বড় বড় কোম্পানিগুলো সেই সমস্ত
মানুষদের নিয়ে কাজ করে, যারা ভালো ভাবে কথা বলতে
পারে এবং যারা ক্লায়েন্টদের সাথে সুকৌশলে কথা বলে কোম্পানির ভাঁড়ারে লাভের গুড় এনে
দেয়। সুখবর হলো, নিয়মিত বই পড়লে মানুষের সাথে আপনার যোগাযোগ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। আপনার লেখার ধরণ এবং ভাষা প্রয়োগ করার পদ্ধতি উন্নতমানের হয়ে যায়। কারণ আপনি যখন বই পড়েন, তখন আপনি সেই লেখার ধরণ
এবং বাক্যবিন্যাস কি ভাবে করা হয়েছে তা লক্ষ্য করেন। সেই সকল উদাহরণ আপনি
আপনার দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতেই পারেন।
৮) মানিসিক চাপ কমায়
জানেন কি, নিয়মিত বই পড়বার অভ্যাস আপনার মানসিক চাপ কমায়? আশ্চর্য হলেন? অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সত্যি! একটি গবেষণায় [এই লিঙ্কে ক্লিক করুন] প্রমানিত হয়েছে; কেউ যদি আধ ঘণ্টা বই পড়ে তবে তার রক্তচাপ কমে আসে, হৃদযন্ত্রের স্পন্দন ধীর গতিতে হয় এবং মানসিক অস্থিরতা
ও নেতিবাচক অনুভূতিগুলি থেকে সে মুক্তি পায়। জ্ঞানীয় নিউরোসাইকোলজিস্ট, ড্যাভিড লিউইস বলেনঃ “বইয়ের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলাই হলো চরম স্বস্তি।” তাই বই পড়ুন, তার সাথে নিজেকে মানসিক ভাবে সুস্থ রাখুন।
৯) মানসিক স্বাস্থের উন্নতি
নিয়মিত বই
পড়ার একটি নিশ্চিত ফলাফল হলো, এটা মানুষের মানসিক স্বাস্থের
উন্নতি ঘটায়। যারা নিয়মিত বই পড়ে তাদের মানসিক স্বাস্থ
অন্যদের চাইতে অনেক বেশী ভালো। একটা গবেষণা [https://www.wsj.com/articles/SB118583572352482728]
বলছে, ভালো বই পড়লে মানসিক চাপ কমে আসে এবং তার সাথে সাথে মেজাজের অস্বাভাবিক পরিবর্তন
বন্ধ হয়ে যায়। “বিব্লিওথেরাপি” দ্বারা বইয়ের মাধ্যমে মানুষকে মানসিক
একরকমের বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া হয়। যারা একাকীত্বে ভুগছে, তারা যদি নিয়মিত বই পড়বার একটা অভ্যাস গড়ে তোলে, এটা তাদেরকে একাকীত্ব জনিত মানসিক সমস্যা থেকে অনেকটাই
মুক্তি দেবে। এছাড়াও যারা অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ (Introvert), যারা খুব একটা বাড়ীর বাইরে বের হয়না
এবং মানুষের সাথে তেমন একটা মেলামেশা করে না, তাদের জন্য বই একটি বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো। আপনি যদি তাদেরই একজন
হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার নিয়মিত বই পড়াটা খুব দরকার।
১০) দীর্ঘজীবনের বৃদ্ধি
এই শেষের
অংশটি দুর্দান্ত বলে যেতে পারে। গবেষণা করে জানা গেছে যে, নিয়মিত বই পড়বার স্বাস্থকর উপকারিতা আমাদের দীর্ঘকাল বাঁচতে
সাহায্য করে। ১২ বছরের একটি গবেষণা [https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6245064/]
যা করা হয়েছিল মানুষের স্বাস্থ ও অবসরের
উপর; তাতে জানা গেছে যারা নিয়মিত বই পড়েন, তারা তাদের চাইতে ২-৩ বছর বেশী বাঁচেন, যারা বই পড়েন না। এছাড়াও, সেই সকল মানুষ ২৩% বেশী বেঁচে থাকেন যারা প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে বই পড়েন (সপ্তাহে সাড়ে ৩ ঘণ্টা)। এর আগেও বলেছিলাম, নিয়মিত বই পড়বার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ ও সতেজ
রাখে। তার সাথে মস্তিস্কের সঠিক কার্যকারিতাকে সবসময় সক্রিয়
রাখে। এর ফলে মস্তিস্কের বার্ধক্যজনিত ক্রিয়ার হ্রাস পায়। ডঃ রবার্ট ফ্রিডল্যান্ড বলেনঃ “যারা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে
সঠিকভাবে ব্যবহার করে না, তারা মস্তিষ্কের ক্ষমতা
হারায়।” আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইন্সিটিউট অফ এজীং’ সংগঠনটি খেলোয়াড়দের স্বাস্থের
ও মানসিক উপকারিতার জন্য নিয়মিত বই পড়বার জন্য সুপারিশ করেছে।
এতক্ষণ আপনি
পড়লেন নিয়মিত বই পড়বার উপকারিতা কি কি আছে। বই পড়ার অভ্যাস একটা মানুষের স্বভাব, চারিত্রিক গঠন এমনকি তার জীবনও পাল্টে দেয়। আমি নিজেও বই পড়তে ভালোবাসি। জীবন ব্যাস্ততার মাঝে প্রতিদিন যতটুকু
অবসর সময় হাতে পাই, তখন বই পড়ি। একজন ব্লগার ও কন্টেন্ট
লেখক হিসেবে আমাকে বই পড়তে হয়, বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়তে
হয় এবং সেই সমস্ত বিষয়ের উপরেও পড়াশুনা করতে হয়, যে সমস্ত বিষয়ের উপর আমি সচরাচর লেখালিখি করি। পৃথিবীর সকল ধনী ও প্রভাবশালী
ব্যাক্তিরা নিয়মিত বই পড়েন। বই পড়ার বিষয়ে নিচে কয়েকজন বিখ্যাত
ব্যাক্তিদের উক্তি দেওয়া হলো যাতে আপনি অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
“কয়েক হাজার বই পড়ুন, এবং আপনার কথাগুলি নদীর মতো প্রবাহিত হবে।” - লিসা সি
“বই হল প্লেন, ট্রেন এবং রাস্তা। তারাই গন্তব্য এবং যাত্রা।” - আনা কুইন্ডলেন
“একটি বই একটি স্বপ্ন যা আপনি আপনার হাতে ধরে রাখেন।” - নিল গাইমান
“আপনি কখনই যথেষ্ট বড় এক কাপ চা বা আমার জন্য যথেষ্ট লম্বা বই পেতে পারেন না।” - সিএস লুইস
“ বই পড়া অগণিত অ্যাডভেঞ্চারের একটি পাসপোর্ট।” - মেরি পোপ অসবর্ন
“কখনও একটি বইকে এর চলচ্চিত্র দ্বারা বিচার করবেন না।” - জে.কে. রাউলিং
“বই ছাড়া একটি ঘর, আত্মা ছাড়া শরীরের মত।” - মার্কাস টুলিয়াস সিসেরো
“এত বই, এত কম সময়।” - ফ্রাঙ্ক জাপ্পা
“আমি টেলিভিশনকে খুব শিক্ষনীয় মনে করি। যখনই কেউ সেট চালু করে, আমি অন্য ঘরে গিয়ে একটি বই পড়ি।” - গ্রোচো মার্কস
“ট্রেজার আইল্যান্ডের জলদস্যুদের লুটের চেয়ে বইয়ে আরও বেশি ধন আছে।” - ওয়াল্ট ডিজনি
“একজন পাঠক মৃত্যুর আগে হাজারটা জীবন যাপন করে... যে মানুষ কখনো পড়ে না সে শুধু একটিই জীবন বাঁচে।” - জর্জ আর আর মার্টিন
“বইয়ের মত অনুগত আর কোন বন্ধু নেই।” - আর্নেস্ট হেমিংওয়ের
“যারা সাধারণের ঊর্ধ্বে উঠতে চায় তাদের জন্য বই পড়া অপরিহার্য।” - জিম রোহন
“বই পড়া একটি একাকী আনন্দ যা একজন লেখকের সাথে ভাগ করা হয়।” - মার্গারেট অ্যাটউড
“একটি বই এমন একটি উপহার যা আপনি বারবার খুলতে পারেন।” - গ্যারিসন কিলোর
[আপনি যদি গুরতর ভাবে কোন মানসিক সমস্যা কিংবা মানসিক চাপে ভুগছেন, তবে আমি আপনাকে মনরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে অনুরোধ করছি]