মুসলিমদের দাবী, সারা পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মের প্রসার বাড়ছে। দলে দলে অনেক মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলিম হয়ে যাচ্ছে। এটাতেই নাকি প্রমাণ হয়, ইসলাম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব। না হলে এতো মানুষ ইসালামের পথে আসে কি ভাবে? কিন্তু কোন ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা বাড়লেই কি সেই ধর্মের শ্রেষ্ঠতা বা সততা প্রমাণিত হয়? আমার তেমনটা জানা নেই। তবে সে যাই হোক, সত্যিটা হলো যে মুসলিমরা অনেক সন্তানের জন্ম দেয়, তাদের সন্তান সংখ্যা অন্যান্য ধর্মের মানুষের চাইতে অনেকটাই বেশী। আর তা ছাড়াও, কোনও মুসলিমের পক্ষে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করা মানে, অন্য মুসলিমের হাতে খুন হওয়া। অনেক “হাদিসে” ইসালামের নবী তার অনুগামীদের বলেই রেখেছেন, “যে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করবে, তাকে যেন হত্যা করা হয়!”। এমনটি কিন্তু খ্রীষ্টধর্মে দেখতে পাওয়া যায়না। এমন আদেশ খ্রীষ্টধর্মে নেই। বিভিন্ন তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে, যত সংখ্যক মুসলিম পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করে ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, তার চাইতে অধিক সংখ্যক মুসলিম আসলেই ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে চলে যায়। অবশ্য ধর্মত্যাগী মুসলিমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের আসল পরিচয় গোপন রাখে, যাতে তাদের অন্য মুসলিমদের হাতে হত্যা হতে না হয়। এটাই ইসলামিক সারিয়ার নিয়ম। আপনি গুগলে একটা সার্চ দিলেই এই বিষয়ে অনেক ঘটনার ভিডিও, খবর ও অন্যান্য তথ্য দেখতে পাবেন।
লিবিয়ার ইসলামিক আইনের, বিজ্ঞান মঞ্চের কম্পানিয়ন্স লাইটহাউসের সভাপতি, শেখ আহমদ আল কাতানির সাথে আল-জাজিরা নিউজ চ্যানেলে সাক্ষাৎকার হয়। তিনি সেই সাক্ষাৎকারে বলেন, “প্রতি ঘন্টায় সারা বিশ্বে
প্রায় ৬৬৭ জন মুসলিম খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন করছে! প্রতিদিন প্রায় ১৬,০০০ মুসলমান খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করে। প্রতি বছর, শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই ৬০ লক্ষ মুসলমান খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করে।... আশা করি আপনি
বিশ্বব্যাপী সংখ্যাটা কল্পনা করতে পারছেন ?”। এই কথা শুনে যিনি সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন, তার চোখ কপালে উঠে যায়। সে বলে, “কি বলছেন ? ৬০ লক্ষ মুসলিম ?” তিনি বলেন : “হ্যাঁ, কথাটা দুঃখজনক। কিন্তু সত্যি !”।
শেখ আহমদ আল কাতানির দেওয়া এই তথ্যে ইসলাম ধর্মের
বড় বড় ব্যক্তি কর্তাদের মাথা নাড়িয়ে দিয়েছে। তার দেওয়া এই তথ্যের কেউই
বিরোধিতা করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, ইসলাম ধর্মের শাস্ত্র বিশারদদের একাংশ এই কথা স্বীকার করেছেন যে, “বর্তমানে সারা বিশ্বে যে বিপুল সংখ্যায় মুসলিমরা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে চলেছে, একথা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই।”
এই সরগরম সাক্ষাৎকারের লাইভ ভিডিও কোম্পানির নিউজ
চ্যানেলে প্রকাশ হওয়ার পর মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পরে
রাজনৈতিক কারণে আল জাজিরা মিডিয়া এই ভিডিওটি তাদের ওয়েবসাইট থেকে মুছে
ফেলে। কিন্তু বেশ কিছু ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল এই ভিডিওতে বলা সমস্ত তথ্য
আপলোড করতে থাকে। এ নিয়ে আরও কিছু তথ্য এখানে
উল্লখ করা প্রয়োজন।
সালেম ভয়েস মন্ত্রণালয় ভারতে এবং অন্যান্য অনেক
ইসলাম প্রধান দেশে মুসলমানদের কাছে যীশুর বাণী প্রচার করছে। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রায় ৫০০ জনের অধিক বাণীপ্রচারক
মুসলমানদের মধ্যে বাণীপ্রচারের কাজ করছেন। একটি বিশাল সংখ্যক মুসলিম সত্যকে খুঁজে
পাচ্ছে এবং দিনে দিনে যীশু খ্রীষ্টের দেওয়া পরিত্রাণ অর্জন করছে।
প্রতি বছর ভারত জুড়ে প্রায় ১০,০০০ এরও বেশি মুসলিম যীশু খ্রীষ্টকে তাদের ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ
করছে। বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া মুসলিমদের জন্য তাদের নিজস্ব পরিভাষা এবং
শব্দভান্ডার সহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা এবং তাজি ভাষায় হাজার হাজার নতুন নিয়ম (New
Testament) প্রকাশ করছে। মুসলিমদের কাছে মঙ্গলসমাচার পৌঁছানোর
জন্য, বাইবেল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার বাইবেল অনুবাদকদের মধ্যে
পল সিনিরাজ মোহাম্মদ, সালেম ভয়েস
মিনিস্ট্রিজের বিশিষ্ট একজন ব্যক্তি। তিনি নিপীড়নের মধ্যে আছেন। মুসলিম
উগ্রবাদীরা তাকে ও তার গোটা পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
সালেম ভয়েস মিনিস্ট্রিজের বিশিষ্ট কর্মকর্তা ইদ্রিস
সালাহউদ্দিন বলেন, “খ্রীষ্টানদের প্রতি মৌলবাদী
মুসলিমদের নৃশংস আচরণ ও হত্যা দেখে শত শত সাধারণ মুসলমান যীশু খ্রীষ্টকে
ত্রাণকর্তা বলে বিশ্বাস করছে এবং গোপনে খ্রীষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হচ্ছে। হয়তো
এই অত্যাচার দুর্বল খ্রীষ্টানদের আরও বিশ্বাস এবং সাহসের জন্য শুদ্ধিকরণ ও সাহস
যুগিয়ে দেবে।”
সবচেয়ে নাটকীয় ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হল, অনেক মুসলিম দেশ, যেমন - ইরান এবং
ইরাকের শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলিমরা যীশুর স্বপ্ন এবং দর্শন দেখছে। তার চাইতেও
বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো, ইসলাম ধর্মের জন্মস্থান সৌদি আরবেও বহু
মুসলিম গোপনে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে যীশু খ্রীষ্টকে তাদের ঈশ্বর ও ত্রাণকর্তা বলে স্বীকার
করে নিচ্ছে। তারা নিজেরাই স্থানীয়
গীর্জায় এসে ব্যাখ্যা করছে যে তারা ইতিমধ্যেই ধর্মান্তরিত হয়েছে এবং তাদের একটি
বাইবেল খুবই প্রয়োজন, যাতে তারা কীভাবে
যীশুকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে তা বুঝতে পারে।
বর্তমানে বহু প্রাক্তন মুসলিম (Ex Muslim), যারা এখন খ্রীষ্টান হয়ে গিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট ও বিভিন্ন
সামাজিক মাধ্যমে অন্যান্য মুসলিমদের সাথে তুলনামূলক ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও তর্কালচনার মাধ্যমে
ইসলামের মৌলিক দাবীগুলিকে মিথ্যা বলে প্রমাণ করছেন এবং তার সাথে প্রতিষ্ঠা করছেন খ্রীষ্টধর্মের
দাবীগুলিকে। এর ফলে আরও মুসলিম ইসলাম ত্যাগ করছেন। মুসলিমদের একাংশ এ নিয়ে এতই অতিষ্ঠ
হয়ে উঠেছে যে, তাদের
সামনে পেলে জ্যান্ত চিবিয়ে খাবে।
সারা বিশ্বে প্রতিদিন এই ধরনের শত শত ঘটনা ঘটে চলেছে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, যেখানে মুসলিমরা
ঘোর খ্রীষ্টধর্ম বিরোধী, সেখানে বহু
সংখ্যায় মুসলিমরা কি ভাবে মনপরিবর্তন করে যীশু খ্রীষ্টকে নিজেদের প্রভু এবং
ত্রাণকর্তা বলে গ্রহন করছে ? আসলে এই ঘটনাগুলির মধ্যে দিয়ে পবিত্র বাইবেলে প্রকাশিত সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের
করা ভবিষ্যতবাণী সত্যি হয়ে উঠেছে। তিনি বলেছেনঃ
“যত বিদ্রুপকারী দম্ভিকের দল, চেয়ে দেখো তোমরা! দেখে দেখে অবাক হয়ে এই পৃথিবী থেকে মুছেই যাও তোমরা! কেন না তোমাদের এই দিনগুলোতেই আমি এই মহাকীর্তি সাধন করতে চলেছি, এমনই এক মহাকীর্তি, যা তোমাদের কাছে বর্ণনা করা হলেও তোমরা তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারবে না!”
(হাবাকুক ১:৫, শিষ্যচরিত ১৩:৪১)
তথ্যসূত্র :
1. [https://www.aljazeera.net/programs/shareea/articles/2000/12/12-12-6.htm]
2. [https://www.newageislam.com/interfaith-dialogue/muslim-statistics-admin/six-million-muslims-convert-christianity-africa-alone-each-year/d/107965]
3. [https://www.telegraphindia.com/india/why-are-young-muslims-leaving-islam/cid/1704203]
4. [https://www.news18.com/news/opinion/why-muslims-in-kerala-are-leaving-islam-4694180.html]
5. [https://virtueonline.org/6-million-muslims-leave-islam-every-year]